বিয়ের দিন সকালে কাঁচা হলুদ বেঁটে গায়ে হলুদের রীতি হয়তো অনেক দেখেছেন। অনেকের ধারণা, হলুদ গায়ে মাখলে ত্বক ভালো থাকে। উজ্জ্বল হয়। সেটা ঠিক। কিন্তু কাঁচা হলুদের গুণ শুধু এইটুকুতে বাঁধা যায় না। করোনার সময়ে বাজারে কাঁচা হলুদের আকাল দেখা দিয়েছিল। কারণ, চাহিদা ব্যাপক বেড়ে গিয়েছিল। তাহলে কী হলুদ করোনা রোধ করতে পারে ? এখনও বৈজ্ঞানিকভাবে তা প্রমাণিত নয়। তবে এটা সত্যি রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনি যদি এক টুকরো কাঁচা হলুদ খান, তাহলে যেকোনও রোগ বাপ বাপ বলে পালাবে। কাঁচা হলুদের এতটাই মহিমা। আরও আছে। হলুদ আপনার শরীরে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে বাসা বাঁধতে দেয় না। রোজ সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়ার অভ্যাস তাই ফিরিয়ে আনুন। জেনে রাখুন, আমাদের দেশের আয়ুর্বেদ শ্রাস্ত্রে এর হাজারো গুণের বর্ণনা আছে। রান্নায় হলুদ যেমন অপরিহার্য, ঠিক তেমনই কাঁচা হলুদের বিকল্প নেই।
কাঁচা হলুদের গুণ
ত্বকের বয়স কমিয়ে দেয়
মুখের ত্বকের বয়স কমাতে আর উজ্জ্বল স্ক্রিন পেতে কাঁচা হলুদের জুড়ি নেই। হলুদের থাকে কারকিউমিনের অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট গুণ ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। মুখের মধ্যে বলিরেখা, ট্যান ও নানা ধরণের দাগ কমাতে কাঁচা হলুদ বেঁটে লাগালে উপকার পাবেন।
ক্যান্সার আটকে দেয়
কাঁচা হলুদের মধ্যে কারকিউমিন থাকে। এই উপাদান শরীরের ভিতরে ক্যান্সারের কোষগুলির বৃদ্ধি আটকে দেয়। তাদের মেরে ফেলে। ফলে শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধতে পারে না।
সংক্রমণ রোধ করে
কাঁচা হলুদের কারকিউমিন উপাদান অ্যান্টি- ইনফ্লেমেটারি ও অ্যান্টি- অক্সিডেন্টে ভরতি থাকে। এরা খাদ্যনালীর ভিতর সংক্রমণ রোধ করে। বিভিন্ন রকম ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ আটকে দেয়।
সর্দি- কাশির উপশম
সর্দি-কাশিতে কাঁচা হলুদ দারুণ কাজ করে। শরীরের ইমিউনিটি বাড়িয়ে তোলে। ফলে দ্রুত আরাম মেলে। এমনকি ইনফ্লুয়েঞ্জা রোধ করতে পারে।
ডায়াবেটিসের জন্য লাভজনক
রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে দেয় না কাঁচা হলুদের কারকিউমিন। এটা অ্যান্টি-ডায়াবেটিস এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এতে মজুদ ইনসুলিন হরমোনের ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে, অগ্নাশয় সুস্থ থাকে।
ওজন কমিয়ে দেয়
যাঁরা মোটা হয়ে যাওয়ার আশংকায় ভোগেন। তাঁদের জন্য কাঁচা হলুদ খুব কাজের। শরীরে বাড়তি মেদ জমতে দেয় না। মেটাবলিজমের হার বাড়ায়।
হেপাটাইটিস রুখে দেয়
কাঁচা হলুদ নিয়মিত খেলে সেটি যকৃতের রক্ষাকর্তা হিসেবে কাজ করে। হলুদের অ্যান্টি- ইনফ্লেমেটারি ও অ্যান্টি- ভাইরাল হেপাটাইটিসের সময় যকৃতের প্রদাহ কমিয়ে দিতে পারে।
হাঁপানিতে উপকারী
যাঁরা হাঁপানিতে ভোগেন। নিয়মিত কাঁচা হলুদ খান। এটি শ্বাসনালির পথ পরিষ্কার রাখে। ফলে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় না।
অ্যানিমিয়া কমায়
সাধারণত মেয়েরা অয়ানিমিয়াতে আক্রান্ত হয়। নিয়মিত কাঁচা হলুদ খান উপকার পাবেন। এটি লোহিত রক্ত কণিকাকে রক্ষা করে।
কীভাবে খাবেন ?
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, ঘন দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। গুড় বা অন্য কোন জিনিসের সঙ্গে খেলে অতটা উপকার পাওয়া যায় না। কারণ, হলুদের উপস্থিত কারকিউমিন দুধের স্নেহ পদার্থের সঙ্গে ভালো যায়। দুটির মিশ্রণে ভালো ফল পাবেন।
No comments: